সূরা "আস্ সা-ফফা-ত"

بِسۡمِ اللهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِيۡمِ 
পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে




১.) সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মানদের কসম,


২.) তারপর যারা ধমক ও অভিশাপ দেয় তাদের কসম,


৩.) তারপর তাদের কসম যারা উপদেশবাণী শুনায়,


৪.) তোমাদের প্রকৃত মাবুদ মাত্র একজনই-


৫.) যিনি পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর এবং পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যা কিছু আছে তাদের সবার মালিক এবং সমস্ত উদয়স্থলের মালিক।


৬.) আমি দুনিয়ার আকাশকে তারকারাজির সৌন্দর্য দ্বারা সুসজ্জিত করেছি


৭.) এবং প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান থেকে তাকে সুরক্ষিত রেখেছি।


৮.) এ শয়তানরা ঊর্ধ্ব জগতের কথা শুনতে পারে না,


৯.) সবদিক থেকে আঘাতপ্রাপ্ত ও তাড়িত হয় এবং তাদের জন্য রয়েছে অবিরাম শাস্তি।


১০.) তবুও যদি তাদের কেউ তার মধ্য থেকে কিছু হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয় তাহলে একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা তার পেছনে ধাওয়া করে।


১১.) এখন এদেরকে জিজ্ঞেস করো, এদের সৃষ্টি বেশী কঠিন, না আমি যে জিনিসগুলো সৃষ্টি করে রেখেছি সেগুলোর? এদেরকে তো আমি সৃষ্টি করেছি আঠাল কাদামাটি দিয়ে।


১২.) তুমি তো (আল্লাহর কুদরাতের মহিমা দেখে) অবাক হচ্ছো এবং এরা তার প্রতি করছে বিদ্রূপ।


১৩.) তাদেরকে বুঝালেও তারা বোঝে না।


১৪.) কোন নিদর্শন দেখলে উপহাস করে উড়িয়ে দেয়


১৫.) এবং বলে, “এ তো স্পষ্ট যাদু।


১৬.) আমরা যখন মরে একেবারে মাটি হয়ে যাবো এবং থেকে যাবে শুধুমাত্র হাড়ের পিঞ্জর তখন আমাদের আবার জীবিত করে উঠানো হবে, এমনও কি কখনো হতে পারে?


১৭.) আর আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকেও কি উঠানো হবে?”


১৮.) এদেরকে বলো, হ্যাঁ এবং তোমরা (আল্লাহর মোকাবিলায়) অসহায়।


১৯.) ব্যস, একটিমাত্র বিকট ধমক হবে এবং সহসাই এরা স্বচক্ষে (সেই সবকিছু যার খবর দেয়া হচ্ছে) দেখতে থাকবে।


২০.) সময় এরা বলবে, হায়! আমাদের দুর্ভাগ্য, এতো প্রতিফল দিবস


২১.) “এটা সে ফায়সালার দিন যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে।”


২২.) (হুকুম দেয়া হবে) ঘেরাও করে নিয়ে এসো


২৩.) সব জালেমকে, তাদের সাথীদেরকে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব মাবুদদের তারা বন্দেগী করতো তাদেরকে তারপর তাদের সবাইকে জাহান্নামের পথ দেখিয়ে দাও।


২৪.) আর এদেরকে একটু থামাও, এদেরকে কিছু জিজ্ঞেস করতে হবে।


২৫.) “তোমাদের কি হয়েছে, এখন কেন পরস্পরকে সাহায্য করো না?


২৬.) আরে, আজ তো এরা নিজেরাই নিজেদেরকে (এবং একজন অন্যজনকে) সমর্পণ করে দিয়ে যাচ্ছে।”


২৭.) এরপর এরা একে অন্যের দিকে ফিরবে এবং পরস্পর বিতর্ক শুরু করে দেবে।


২৮.) (আনুগত্যকারীরা তাদের নেতাদেরকে) বলবে, “তোমরা তো আমাদের কাছে আসতে সোজা দিক দিয়ে।”


২৯.) তারা জবাব দেবে, “না, তোমরা নিজেরাই মু’মিন ছিলে না।


৩০.) তোমাদের ওপর আমাদের কোন জোর ছিল না। বরং তোমরা নিজেরাই ছিলে বিদ্রোহী।


৩১.) শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের রবের এ ফরমানের হকদার হয়ে গেছি যে, আমরা আযাবের স্বাদ গ্রহণ করবো।


৩২.) কাজেই আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলাম কারণ আমরা নিজেরাই বিভ্রান্ত ছিলাম।”


৩৩.) এভাবে তারা সবাই সেদিন শাস্তিতে শরীক হবে।


৩৪.) আমি অপরাধীদের সাথে এমনটিই করে থাকি।


৩৫.) এরা ছিল এমন সব লোক যখন এদেরকে বলা হতো, “আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই” তখন এরা অহংকার করতো


৩৬.) এবং বলতো, “আমরা কি একজন উন্মাদ কবির জন্য আমাদের মাবুদদেরকে ত্যাগ করবো?”


৩৭.) অথচ সে সত্য নিয়ে এসেছিল এবং রসূলদেরকে সত্য বলে মেনে নিয়েছিল


৩৮.) (এখন তাদেরকে বলা হবে) তোমরা নিশ্চিতভাবেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করবে


৩৯.) এবং পৃথিবীতে তোমরা যে সমস্ত কাজ করতে তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হচ্ছে।


৪০.) কিন্তু আল্লাহর নির্বাচিত বান্দারা (এ অশুভ পরিণাম) মুক্ত হবে।


৪১.) তাদের জন্য রয়েছে জ্ঞাত রিযিক,


৪২.) সব রকমের


৪৩.) সুস্বাদু জিনিস এবং নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত, যেখানে তাদেরকে মর্যাদা সহকারে রাখা হবে।


৪৪.) বসবে তারা আসনে মুখোমুখি।


৪৫.) শরাবের ঝরণা থেকে পানপাত্র ভরে ভরে তাদেরকে ঘুরে ঘুরে পরিবেশন করা হবে।


৪৬.) উজ্জ্বল শরাব, পানকারীদের জন্য হবে সুস্বাদু।


৪৭.) তা তাদের কোন শারীরিক ক্ষতি করবে না এবং তাতে তাদের বুদ্ধিও ভ্রষ্ট হবে না।


৪৮.) আর তাদের কাছে থাকবে আনত নয়না  সুলোচনা নারীগণ,


৪৯.) এমন নাজুক যেমন হয় ডিমের খোসার নিচে লুকানো ঝিল্লি।


৫০.) তারপর তারা একজন অন্যজনের দিকে ফিরে অবস্থা জিজ্ঞেস করবে।


৫১.) তাদের একজন বলবে, “দুনিয়ায় আমার ছিল এক সঙ্গী,


৫২.) সে আমাকে বলতো, তুমিও কি সত্য বলে মেনে নেবার দলে?


৫৩.) যখন আমরা মরে যাবো, মাটির সাথে মিশে যাবো এবং অস্থি পিঞ্জরই থেকে যাবে তখন সত্যিই কি আমাদের শাস্তি ও পুরস্কার দেয়া হবে?


৫৪.) তোমরা কি দেখতে চাও সে এখন কোথায় আছে?”


৫৫.) এ বলে যেমনি সে নিচের দিকে ঝুঁকবে তখনই দেখবে তাকে জাহান্নামের অতল গভীরে।


৫৬.) এবং তাকে সম্বোধন করে বলতে থাকবে, “আল্লাহর কসম, তুই তো আমাকে ধ্বংসই করে দিতে চাচ্ছিলি।


৫৭.) আমার রবের মেহেরবাণী না হলে আজ আমিও যারা পাকড়াও হয়ে এসেছে তাদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।


৫৮.) আচ্ছা, তাহলে কি এখন আমরা আর মরবো না?


৫৯.) আমাদের যে মৃত্যু হবার ছিল তা প্রথমেই হয়ে গেছে? এখন আমাদের কোন শাস্তি হবে না?”


৬০.) নিশ্চিতভাবেই এটিই মহান সাফল্য।


৬১.) এ ধরনের সাফল্যের জন্যই কাজ করতে হবে তাদের যারা কাজ করে।


৬২.) বলো, এ ভোজ ভালো, না যাক্কুম গাছ?


৬৩.) আমি এ গাছটিকে জালেমদের জন্য ফিতনায় পরিণত করে দিয়েছি।


৬৪.) সেটি একটি গাছ, যা বের হয় জাহান্নামের তলদেশ থেকে।


৬৫.) তার ফুলের কলিগুলো যেন শয়তানদের মুণ্ডু।


৬৬.) জাহান্নামের অধিবাসীরা তা খাবে এবং তা দিয়ে পেট ভরবে।


৬৭.) তারপর পান করার জন্য তারা পাবে ফুটন্ত পানি।


৬৮.) আর এরপর তাদের প্রত্যাবর্তন হবে। এ অগ্নিময় দোজখের দিকে।


৬৯.) এরা এমনসব লোক যারা নিজেদের বাপ-দাদাদেরকে পথভ্রষ্ট পেয়েছে।


৭০.) এবং তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে ছুটে চলেছে।


৭১.) অথচ তাদের পূর্বে বহু লোক পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল


৭২.) এবং তাদের মধ্যে আমি সতর্ককারী রসূল পাঠিয়েছিলাম।


৭৩.) এখন দেখো সে সতর্ককৃত লোকদের কি পরিণাম হয়েছিল।


৭৪.) এ অশুভ পরিণতির হাত থেকে কেবলমাত্র আল্লাহর সে বান্দারাই রেহাই পেয়েছে যাদেরকে তিনি নিজের জন্য স্বতন্ত্র করে নিয়েছেন।


৭৫.) (ইতিপূর্বে) নূহ আমাকে ডেকেছিল, তাহলে দেখো, আমি ছিলাম কত ভালো জওয়াবদাতা।


৭৬.) আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে উদ্ধার করি ভয়াবহ যন্ত্রণা থেকে,


৭৭.) শুধু তাঁর বংশধরদেরকেই টিকিয়ে রাখি


৭৮.) এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে তাঁরই প্রশংসা ছেড়ে দেই।


৭৯.) সমগ্র বিশ্ববাসীর মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।


৮০.) সৎকর্মশীলদেরকে আমি এমনই প্রতিদান দিয়ে থাকি।


৮১.) আসলে সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।


৮২.) তারপর অন্যদলকে আমি ডুবিয়ে দেই।


৮৩.) আর নূহের পথের অনুসারী ছিল ইবরাহীম।


৮৪.) যখন সে তাঁর রবের সামনে হাজির হয় “বিশুদ্ধ চিত্ত” নিয়ে।


৮৫.) যখন বলে সে তাঁর পিতা ও তাঁর জাতিকে “এগুলো কি জিনিস যার ইবাদাত তোমরা করছো?


৮৬.) আল্লাহকে বাদ দিয়ে কি তোমরা মিথ্যা বানোয়াট মাবুদ চাও?


৮৭.) সমস্ত বিশ্ব-জগতের রব আল্লাহ‌ সম্পর্কে তোমাদের ধারণা কি?”


৮৮.) তারপর সে তারকাদের দিকে একবার তাকালো


৮৯.) এবং বললো, আমি অসুস্থ।


৯০.) কাজেই তারা তাঁকে ত্যাগ করে চলে গেলো।


৯১.) তাদের পেছনে সে চুপিচুপি তাদের দেবতাদের মন্দিরে ঢুকে পড়লো এবং বললো, “আপনারা খাচ্ছেন না কেন?”


৯২.) কি হলো আপনাদের, কথা বলছেন না কেন?”


৯৩.) এরপর সে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং ডান হাত দিয়ে খুব আঘাত করলো।


৯৪.) (ফিরে এসে) তারা দৌঁড়ে তাঁর কাছে এলো।


৯৫.) সে বললো, “তোমরা কি নিজেদেরই খোদাই করা জিনিসের পূজা করো?


৯৬.) অথচ আল্লাহই তোমাদেরকেও সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যে জিনিসগুলো তৈরি করো তাদেরকেও।”


৯৭.) তারা পরস্পর বললো, “এর জন্য একটি অগ্নিকুণ্ডু তৈরি করো এবং একে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে ফেলে দাও।”


৯৮.) তারা তাঁর বিরুদ্ধে একটি পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিল কিন্তু আমি তাদেরকে হেয়প্রতিপন্ন করেছি।


৯৯.) ইবরাহীম বললো, “আমি আমার রবের দিকে যাচ্ছি, তিনিই আমাকে পথ দেখাবেন।


১০০.) হে পরওয়ারদিগার! আমাকে একটি সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দাও।”


১০১.) (এ দোয়ার জবাবে) আমি তাঁকে একটি ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।


১০২.) সে পুত্র যখন তার সাথে কাজকর্ম করার বয়সে পৌঁছলো তখন (একদিন ইবরাহীম তাঁকে বললো, “হে পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখি তোমাকে আমি যাবেহ করছি, এখন তুমি বল তুমি কি মনে করো?” সে বললো, “হে আব্বাজান! আপনাকে যা হুকুম দেয়া হচ্ছে তা করে ফেলুন, আপনি আমাকে ইনশাআল্লাহ সবরকারীই পাবেন।”


১০৩.) শেষ পর্যন্ত যখন এরা দু’জন আনুগত্যের শির নত করে দিল এবং ইবরাহীম পুত্রকে উপুড় করে শুইয়ে দিল।


১০৪.) এবং আমি আওয়াজ দিলাম, “হে ইবরাহীম!


১০৫.) তুমি স্বপ্নকে সত্য করে দেখিয়ে দিয়েছো। আমি সৎকর্মকারীদেরকে এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি।


১০৬.) নিশ্চিতভাবেই এটি ছিল একটি প্রকাশ্য পরীক্ষা।”


১০৭.) একটি বড় কুরবানীর বিনিময়ে আমি এ শিশুটিকে ছাড়িয়ে নিলাম 


১০৮.) এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে চিরকালের জন্য তার প্রশংসা রেখে দিলাম।


১০৯.) শান্তি বর্ষিত হোক ইবরাহীমের প্রতি।


১১০.) আমি সৎকর্মকারীদেরকে এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি।


১১১.) নিশ্চিতভাবেই সে ছিল আমার মুসলিম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।


১১২.) আর আমি তাঁকে ইসহাকের সুসংবাদ দিলাম, সে ছিল সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে একজন নবী।


১১৩.) বরকত দিলাম তাঁকে ও ইসহাককে, এখন এ দু’জনের বংশধরদের মধ্য থেকে কতক সৎকর্মকারী আবার কতক নিজেদের প্রতি সুস্পষ্ট জুলুমকারী।


১১৪.) আমি অনুগ্রহ করেছি মূসা ও হারূনের প্রতি।


১১৫.) তাঁদের উভয়কে ও তাঁদের জাতিকে উদ্ধার করেছি মহাক্লেশ থেকে।


১১৬.) তাঁদেরকে সাহায্য করেছি, যার ফলে তাঁরাই বিজয়ী হয়েছে।


১১৭.) তাঁদের উভয়কে অত্যন্ত সুস্পষ্ট কিতাব দান করেছি।


১১৮.) উভয়কে সঠিক পথ দেখিয়েছি


১১৯.) এবং পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে তাঁদের উভয়ের সম্পর্ক সুখ্যাতি অক্ষুণ্ন রেখেছি।


১২০.) মূসা ও হারূনের প্রতি সালাম।


১২১.) সৎকর্মশীলদের আমি অনুরূপ প্রতিদানই দিয়ে থাকি।


১২২.) আসলে তাঁরা আমার মু’মিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত ছিল।


১২৩.) আর ইলিয়াসও অবশ্যই রসূলদের একজন ছিল।


১২৪.) স্মরণ করো যখন সে তাঁর জাতিকে বলেছিল, “তোমরা ভয় করো না?


১২৫.) তোমরা কি বা’আলকে ডাকো এবং পরিত্যাগ করো শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহকে,


১২৬.) যিনি তোমাদের ও তোমাদের আগের পেছনের বাপ-দাদাদের রব?”


১২৭.) কিন্তু তারা তাঁর প্রতি মিথ্যা আরোপ করলো কাজেই এখন নিশ্চিতভাবেই তাদেরকে শাস্তির জন্য পেশ করা হবে,


১২৮.) তবে আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা ছাড়া।


১২৯.) আর ইলিয়াসের সম্পর্কে সুখ্যাতি আমি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে অব্যাহত রেখেছি।


১৩০.) ইলিয়াসের প্রতি সালাম।


১৩১.) সৎকর্মশীলদের আমি অনুরূপ প্রতিদানই দিয়ে থাকি।


১৩২.) যথার্থই সে আমার মু’মিন বান্দাদের একজন ছিল।


১৩৩.) আর লূতও তাদের একজন ছিল যাদেরকে রসূল বানিয়ে পাঠানো হয়।


১৩৪.) স্মরণ করো যখন আমি তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সকলকে উদ্ধার করি,


১৩৫.) এক বুড়ি ছাড়া যে পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল।


১৩৬.) তারপর বাকি সবাইকে ধ্বংস করে দেই।


১৩৭.) এখন তোমরা দিনরাত তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকা


১৩৮.) অতিক্রম করে যাও। তোমরা কি বোঝ না?


১৩৯.) আর অবশ্যই ইউনুস রসূলদের একজন ছিল।


১৪০.) স্মরণ করো যখন সে একটি বোঝাই নৌকার দিকে পালিয়ে গেলো,


১৪১.) তারপর লটারীতে অংশগ্রহণ করলো এবং তাতে হেরে গেলো।


১৪২.) শেষ পর্যন্ত মাছ তাঁকে গিলে ফেললা এবং সে ছিল ধিকৃত।


১৪৩.) এখন যদি সে তাস্‌বীহকারীদের অন্তর্ভুক্ত না হতো,


১৪৪.) তাহলে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত এ মাছের পেটে থাকতো। 


১৪৫.) শেষ পর্যন্ত আমি তাঁকে বড়ই রুগ্ন অবস্থায় একটি তৃণলতাহীণ বিরান প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম


১৪৬.) এবং তার ওপর একটি লতানো গাছ উৎপন্ন করলাম।


১৪৭.) এরপর আমি তাঁকে এক লাখ বা এর চেয়ে বেশী লোকদের কাছে পাঠালাম।


১৪৮.) তারা ঈমান আনলো এবং আমি একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত তাদেরকে টিকিয়ে রাখলাম।


১৪৯.) তারপর তাদেরকে একটু জিজ্ঞেস করো, (তাদের মন কি একথায় সায় দেয় যে, ) তোমাদের রবের জন্য তো হচ্ছে কন্যারা এবং তাদের জন্য পুত্ররা?


১৫০.) সত্যই কি আমি ফেরেশ্‌তাদেরকে মেয়ে হিসেবে সৃষ্টি করেছি এবং তারা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে একথা বলছে?


১৫১.) ভালো করেই শুনে রাখো, আসলে তারা তো মনগড়া কথা বলে যে,


১৫২.) আল্লাহর সন্তান আছে এবং যথার্থই তারা মিথ্যাবাদী।


১৫৩.) আল্লাহ‌ কি নিজের জন্য পুত্রের পরিবর্তে কন্যা পছন্দ করেছেন?


১৫৪.) তোমাদের কি হয়ে গেছে, কিভাবে ফায়সালা করছো?


১৫৫.) তোমরা কি সচেতন হবে না?


১৫৬.) অথবা তোমাদের কাছে তোমাদের এসব কথার সপক্ষে কোন পরিষ্কার প্রমাণপত্র আছে?


১৫৭.) তাহলে আনো তোমাদের সে কিতাব, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।


১৫৮.) তারা আল্লাহ‌ ও ফেরেশ্‌তাদের মধ্যে আত্মীয় সম্পর্ক স্থাপন করে রেখেছে। অথচ ফেরেশ্‌তারা ভালো করেই জানে তাদেরকে অপরাধী হিসেবে উপস্থিত করা হবে


১৫৯.) (এবং তারা বলে, ) “আল্লাহ সেসব দোষ থেকে মুক্ত


১৬০.) যেগুলো তাঁর একনিষ্ঠ বান্দারা ছাড়া অন্যেরা তাঁর ওপর আরোপ করে।


১৬১.) কাজেই তোমরা ও তোমাদের এ উপাস্যরা


১৬২.) কাউকে আল্লাহ‌ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারবে না,


১৬৩.) সে ব্যক্তিকে ছাড়া যে জাহান্নামের প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশকারী হবে।


১৬৪.) আর আমাদের অবস্থা তো হচ্ছে এই যে, আমাদের মধ্য থেকে প্রত্যেকের একটি স্থান নির্ধারিত রয়েছে। 


১৬৫.) এবং আমরা সারিবদ্ধ


১৬৬.) খাদেম ও তাসবীহ পাঠকারী।”


১৬৭.) তারা তো আগে বলে বেড়াতো,


১৬৮.) হায়! পূর্ববর্তী জাতিরা যে “যিকির” লাভ করেছিল তা যদি আমাদের কাছে থাকতো


১৬৯.) তাহলে আমরা হতাম আল্লাহর নির্বাচিত বান্দা। 


১৭০.) কিন্তু (যখন সে এসে গেছে) তখন তারা তাঁকে অস্বীকার করেছে। এখন শিগ্‌গির তারা (তাদের এ নীতির ফল) জানতে পারবে।


১৭১.) আমার প্রেরিত বান্দাদেরকে আমি আগেই, প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে, অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করা হবে।


১৭২.) অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করা হবে


১৭৩.) এবং আমার সেনাদলই বিজয়ী হবে।


১৭৪.) কাজেই হে নবী! কিছু সময় পর্যন্ত তাদেরকে তাদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও।


১৭৫.) এবং দেখতে থাকো, শীঘ্রই তারা নিজেরাও দেখে নেবে।


১৭৬.) তারা কি আমার আযাবের জন্য তাড়াহুড়া করছে?


১৭৭.) যখন তা নেমে আসবে তাদের আঙিনায়, সেদিনটি হবে যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল তাদের জন্য বড়ই অশুভ।


১৭৮.) ব্যস, তাদেরকে কিছুকালের জন্য ছেড়ে দাও


১৭৯.) এবং দেখতে থাকো, শিগ্‌গির তারা নিজেরাও দেখে নেবে।


১৮০.) তারা যেসব কথা তৈরি করছে তা থেকে পাক-পবিত্র তোমার রব, তিনি মর্যাদার অধিকারী।


১৮১.) আর সালাম প্রেরিতদের প্রতি


১৮২.) এবং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ‌ রব্বুল আলামীনেরই জন্য।

No comments:

Post a Comment